সারাদেশ

ঝিনাইদহে আঙ্গুর চাষে সফল কৃষক, চাহিদা থাকায় বাড়ছে আবাদ

প্রিন্ট
ঝিনাইদহে আঙ্গুর চাষে সফল কৃষক, চাহিদা থাকায় বাড়ছে আবাদ

ছবি : ঢাকা ইনসাইটস


প্রকাশিত : ২ মে ২০২৫, রাত ৯:১৫

বাংলাদেশেও যে সুস্বাদু ও মিষ্টি আঙ্গুর চাষ করে সফলতা পাওয়া যায় তারই প্রমাণ দিয়েছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাইদুর্গাপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আরিফুল ইসলাম। আঙ্গুর গাছ লাগিয়ে ফলনও ভালো পেয়েছেন তিনি। সুস্বাদু আর ফলন ভালো হওয়ায় আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এলাকার অন্যান্য কৃষকেরাও। পরীক্ষামূলকভাবে আঙুরের চাষ করেছেন কৃষক আরিফুল। তার উৎপাদিত আঙুর স্বাদ ও গুণেও ভালো। প্রতিদিনই তার আঙ্গুরের বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা। দেখতে আসা মানুষদের তিনি বাগান থেকে আঙ্গুর তুলে খাওয়াচ্ছেন। 


দর্শনার্থীরা বলছেন,মিষ্টি এবং সুস্বাদু এই আঙ্গুর। বাজার থেকে কেনা আঙ্গুরের থেকে কোন অংশে কম নয় বরঞ্চ কোনো কোনোটা আরও বেশি মিষ্টি এবং সুস্বাদু হয়েছে।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়,বাঁশের মাচায় ঝুলছে থোকা থোকা রসালো আঙ্গুর। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলে থাকা সুস্বাদু এই রসালো আঙ্গুর ফলের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক আরিফুল। 

আরিফুল ইসলাম জানান,২০২৩ সালে পরীক্ষামুলক ১০টি সবুজ জাতের চারা রোপন করেন তিনি। সফলতা পেয়ে ২০২৪ সালে বানিজ্যিকভাবে ১৭ শতক জমিতে আঙ্গুর চাষ শুরু করছেন। অনলাইনের মাধ্যমে ভারত ও চীন থেকে চারা সংগ্রহ করে প্রায় ১’শ গাছ লাগিয়েছেন। তার বাগানে একুলো,বাইকুনুর,ব্লাক ম্যাজিক,ভেলেজ সিলভাসহ কয়েক জাতের আঙ্গুর গাছ রয়েছে। চারা রোপনের ৮ মাসের মধ্যে পেয়েছেন ফলন। দৃষ্টিনন্দন আর সুস্বাদু হওয়ায় প্রতিনিয়ত আঙ্গুর বাগান দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ। তার এই সফলতা দেখে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এলাকার অনেক কৃষক।

বাগান দেখতে আসা আলিমুজ্জামান মোল্লা,কাজী জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন বলেন,‘এভাবে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় কখনো আঙুর দেখিনি। আঙুরগুলো অনেক মিষ্টি। প্রতিটি ঝোপায় ২০০ থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত আঙুর আছে। আরিফুলের মতো অন্যরা এ রকম আঙুর চাষ করলে দাম এত বেশি হতো না। আগে ভাবতাম আঙুর চাষে অনেক কষ্ট ও ব্যয়বহুল। কিন্তু এখন দেখি কষ্ট ও খরচ দুটাই কম। এমনকি আঙুর চাষ লাভজনক। আমরা স্বল্প পরিসরে হলেও আঙুর চাষ করবো। যার জন্য জমি ঠিকসহ চারার খোঁজ করছি।’

কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন,‘দেশে মিষ্টি আঙ্গুর উৎপাদন হলে বাইরের দেশ থেকে আঙ্গুর আনা লাগবে না। দেশে উৎপাদিত আঙ্গুর দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরে রপ্তানি করে লাভবান হওয়া যাবে। চলতি মৌসুমে প্রতি গাছে ১০ থেকে ১৫ কেজি হারে ফলন পাবো বলে আশা করছি। 

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন,‘কৃষক আরিফুলের বাগানে প্রচুর পরিমাণে আঙ্গুর ধরেছে। এ জেলার মাটিতে আঙ্গুর চাষ করা সম্ভব। সুস্বাদু আর ফলন ভালো হওয়ায় আশপাশের কৃষকরাও আঙ্গুর আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তার উৎপাদিত আঙুর স্বাদ ও গুণেও ভালো। প্রতিদিনই তার আঙ্গুরের বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আঙ্গুর উৎপাদনে জৈব বালাইনাশক পরামর্শসহ নানা ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। সেই সাথে অন্য কৃষকদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে।